![]() |
| ছবি : সংগৃহীত |
গ্রিস ও আলবেনিয়ার সীমান্তের কাছে একটি গুহার ভেতর থেকে বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন মাকড়সার এক অবিশ্বাস্য সাম্রাজ্য— যেখানে বাস করছে এক লাখ দশ হাজারেরও বেশি মাকড়সা! এমন দৃশ্য শুনলেই অনেকের গায়ে কাঁটা দিতে পারে, কিন্তু গবেষকরা বলছেন, এই আবিষ্কার তাদের কাছে এক বিরল ও রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা।
জীববিজ্ঞানী ইস্তভান উরাকের নেতৃত্বে একদল গবেষক সম্প্রতি ১৭ অক্টোবর প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে এই চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ করেন। তারা জানিয়েছেন, “সালফার কেভ” নামের ওই গুহার ভেতরে বিস্তৃত মাকড়সার জাল প্রায় ১০০ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে আছে, যা পুরো গুহার দেয়াল ও ছাদ প্রায় ঢেকে ফেলেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, এই বিশাল জাল তৈরি করেছে দুই প্রজাতির মাকড়সা— প্রায় ৬৯ হাজার বার্ন ফানেল উইভার এবং প্রায় ৪২ হাজার প্রিনেরিগন ভেগানস বা বামন উইভার। সাধারণত ফানেল উইভাররা বামন উইভারদের শিকার করে থাকে, কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো—এই গুহায় তারা শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, গুহার সীমিত আলো ও পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহের কারণেই তাদের মধ্যে এই সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
গবেষক দলটি গুহার ভেতরের ইকোসিস্টেমও বিশ্লেষণ করেছেন। তারা দেখেছেন, সেখানে একটি সহজ কিন্তু কার্যকর খাদ্য শৃঙ্খল রয়েছে— সালফার জারিত করে মাইক্রোবিয়াল বায়োফিল্ম তৈরি হয়, যা খায় নন-বাইটিং মিজ নামের মাছির শূককীট। পরে সেই মাছিগুলো পূর্ণাঙ্গ হলে মাকড়সার খাবারে পরিণত হয়।
এছাড়া, গুহার এক কোণে বিজ্ঞানীরা শেডেড অর্ব উইভার নামের আরেকটি একাকী প্রজাতির মাকড়সারও সন্ধান পেয়েছেন, যারা অন্যদের থেকে আলাদা বাস করে।
গবেষক দলের প্রধান ইস্তভান উরাক এই আবিষ্কারকে “একটি অবিশ্বাস্য প্রাকৃতিক বিস্ময়” বলে উল্লেখ করেছেন। তার ভাষায়, “এটি এমন এক ইকোসিস্টেম, যা প্রমাণ করে প্রকৃতি কতটা চমৎকারভাবে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে, এমনকি অন্ধকার গুহার ভেতরেও।”
সূত্র: সেভেন নিউজ
