![]() |
| ছবি : সংগৃহীত |
গাজা উপত্যকাজুড়ে নতুন করে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। এতে অন্তত ৩৭ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৬ জন শিশু রয়েছে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, এই আক্রমণ হামাসের সঙ্গে চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন।
গাজার বিভিন্ন হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতের দিকে চালানো হামলাগুলো মূলত আবাসিক ভবনগুলোকে লক্ষ্য করে করা হয়। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেক মানুষ আটকে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থা জানিয়েছিল, নিহতের সংখ্যা ৩০ জনের মতো, তবে পরে তা আরও বেড়েছে। সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, “আমাদের উদ্ধারকর্মীরা সারারাত ধরে ধ্বংসস্তূপ থেকে আহত ও নিহতদের উদ্ধার করছে।”
অন্যদিকে, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় “তাৎক্ষণিক ও শক্ত প্রতিক্রিয়া”র নির্দেশ দিয়েছেন। তার দাবি, রাফাহ সীমান্ত এলাকায় হামাস ইসরাইলি বাহিনীকে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালাচ্ছে। তবে হামাস এসব অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে বলেছে, ইসরাইলই ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করছে এবং চুক্তিটিকে ভেস্তে দিতে চায়।
হামাসের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, ইসরাইল তাদের বন্দিদের মৃতদেহ উদ্ধার ও হস্তান্তরে বাধা দিচ্ছে, যা যুদ্ধবিরতির অন্যতম শর্ত ছিল। সংগঠনটি এ আচরণকে “ব্যবস্থাগত প্রতিবন্ধকতা” হিসেবে বর্ণনা করেছে।
তারা আরও উল্লেখ করেছে, গাজার প্রধান জীবনরেখা রাফাহ ক্রসিং বন্ধ রাখা যুদ্ধবিরতির আরেকটি শর্ত লঙ্ঘনের উদাহরণ।
জানা গেছে, চলতি মাসের শুরুতে মিশরের মধ্যস্থতায় সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পাদিত হয়, যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা পরিকল্পনার প্রথম ধাপ হিসেবে বিবেচিত। ট্রাম্প বলেছিলেন, এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য হলো গাজায় চলমান রক্তপাতের অবসান ঘটানো।
হামাস জানায়, তারা চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এর আওতায় ইসরাইলি বন্দি ও মৃতদেহ ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি গাজার প্রশাসনিক দায়িত্ব ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করবে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প ইসরাইলের “আত্মরক্ষার অধিকার”কে সমর্থন করে হামাসকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন “যদি তারা দায়িত্বশীল আচরণ না করে, তাহলে এর পরিণতি ভয়াবহ হবে।”
তবে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স দাবি করেছেন, যুদ্ধবিরতি এখনো বহাল রয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য বলছে, গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা দ্রুতই বাড়ছে, যা যুদ্ধবিরতির বাস্তবতা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে।
