![]() |
| ছবি : এআই দিয়ে তৈরি |
রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের নতুন প্রজন্মের পারমাণবিক সাবমেরিন 'খাবারোভস্ক'-এর উদ্বোধন করেছে। এই সাবমেরিনটি যে বিশেষ কারণে বিশ্বজুড়ে নজর কেড়েছে, তা হলো এর বহন ক্ষমতা— এটি 'পোসাইডন' নামে পরিচিত পারমাণবিক শক্তিচালিত আন্ডারওয়াটার ড্রোন বা জলযান বহন করবে। এই পোসাইডনকে অনেকেই ‘ডুমসডে মিসাইল’ বা ‘প্রলয়াস্ত্র’ বলেও অভিহিত করছেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠান ও কর্মকর্তাদের উপস্থিতি
সেভমাশ জাহাজঘাটিতে আয়োজিত এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে সাবমেরিনটির উদ্বোধন করেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলোসোভ। এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ান নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল আলেকজান্ডার মোইসেয়েভ এবং জাহাজ নির্মাণ শিল্পের প্রথম সারির কর্মকর্তারা।
উদ্বোধনী ভাষণে বেলোসোভ দিনটিকে 'গুরুত্বপূর্ণ' উল্লেখ করে বলেন, "আজ আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। বিখ্যাত সেভমাশ থেকে ভারী পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ক্রুজার খাবারোভস্ক পানিতে নামছে।"
সাবমেরিনের নির্মাণ ও বিশেষত্ব
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অত্যাধুনিক জলতলের যুদ্ধ এবং রোবোটিক সিস্টেম বহনের উপযোগী করে সেভমাশ এই সাবমেরিনটি তৈরি করেছে। এটি ডিজাইন করেছে বিখ্যাত রুবিন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন ব্যুরো।
রুশ সংবাদ সংস্থা টাসের মতে, এই সাবমেরিনটি দেশের সামুদ্রিক সীমানা রক্ষা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাশিয়ার স্বার্থ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। রুশ দৈনিক কমারসান্ট নিশ্চিত করেছে যে ভবিষ্যতে এই খাবারোভস্ক-শ্রেণির সাবমেরিনগুলোই পোসাইডন ড্রোন বহনের প্রধান প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।
‘পোসাইডন’ ড্রোন : সাফল্যের দাবি ও উদ্বেগ
মাত্র গত সপ্তাহেই রাশিয়া ঘোষণা করে যে তারা সফলভাবে পোসাইডন আন্ডারওয়াটার ড্রোনের পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। এই ড্রোনে ব্যবহৃত হয়েছে পারমাণবিক শক্তিচালিত ইঞ্জিন। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, ড্রোনটি একটি ‘মাদার সাবমেরিন’ থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে এবং এতে কৌশলগত সাবমেরিনে ব্যবহৃত রিঅ্যাক্টরের তুলনায় অনেক ছোট একটি পারমাণবিক রিঅ্যাক্টর ব্যবহার করা হয়েছে।
এই অস্ত্র নিয়ে রুশ কর্মকর্তারা বেশ উচ্চকিত। রুশ নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ একে সরাসরি ‘ডুমসডে মিসাইল’ নামে আখ্যা দিয়েছেন। অন্যদিকে, রুশ পার্লামেন্টের প্রতিরক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান আন্দ্রেই কার্তাপোলভ দাবি করেছেন, পোসাইডন ‘পুরো উপকূলীয় একটি দেশ ধ্বংস করে দিতে সক্ষম’।
যদিও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের অনেক সামরিক বিশেষজ্ঞ পোসাইডনের এই সক্ষমতা ও কার্যকারিতার দূরত্ব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এবং রাশিয়ার দাবিকে কিছুটা অতিরঞ্জিত বলেও মনে করছেন। তবে ক্রেমলিনের বক্তব্য এবং রুশ সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট, মস্কো তাদের নৌবাহিনীর কৌশলগত শক্তিকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানোর একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবেই এই অস্ত্রকে দেখছে।
