![]() |
| ছবি : সংগৃহীত |
নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি সংসদীয় আসনের মধ্যে চারটিতে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। তবে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা) আসনে কোনো প্রার্থী না দেওয়ায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিচ্ছেন।
তৃণমূলের অভিযোগ, তারা দীর্ঘদিন ধরে এই আসনে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে মাঠে কাজ করছেন। অথচ শেষ মুহূর্তে আসনটি জোট শরিক দল জমিয়তে ওলামা ইসলামকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে—এমন খবরই তাদের মন খারাপের কারণ। অন্যদিকে, জমিয়তের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বইছে।
এদিকে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এই আসনে একক প্রার্থী ঘোষণা করে মাঠে নেমে পড়েছে।
ফতুল্লা আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শাহ আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক ভিপি রাজিব (মাসুকুল ইসলাম রাজিব), যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান রনি, ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল বারী ভূঁইয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী।
তারা গত দেড় বছর ধরে গণসংযোগ, সভা, লিফলেট বিতরণসহ নানা রাজনৈতিক কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন।
তৃণমূলের নেতারা বলছেন, তারা ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগ তথা শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছেন। এই সময়ে মামলা-হামলা, নির্যাতন, এমনকি কারাভোগও করতে হয়েছে অনেককে। এখন দেশে যখন রাজনৈতিক পরিবেশ অনুকূলে, তখন বাইরের দলের হাতে আসন ছেড়ে দেওয়া তাদের কাছে “অন্যায়” মনে হচ্ছে।
ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল বারী ভূঁইয়া বলেন, “আমাদের প্রত্যাশা—এই আসনে বিএনপির ত্যাগী নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। জোটের কাউকে দিলে সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়বে।”
জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শাহ আলম জানান, “নীতিগত কারণে আসনটি আপাতত খালি রাখা হয়েছে। আমি আশাবাদী—দল আমাকে মূল্যায়ন করবে।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি অল্প ভোটে পরাজিত দেখানো হলেও প্রকৃতপক্ষে জয়ী হয়েছিলেন। ২০১৮ সালেও দলের সিদ্ধান্তে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছিলেন।
জেলা যুবদলের নেতা মশিউর রহমান রনি বলেন, “শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য আমাকে গুম ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তারপরও আমি মাঠে আছি, দলের কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।”
জমিয়তে ওলামা ইসলামের জেলা সভাপতি মনির হোসাইন কাশেমী জানিয়েছেন, “আগের নির্বাচনের মতো এবারও এই আসন জমিয়তের জন্য ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু জানানো হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “জোটের প্রার্থীই আসল প্রার্থী—প্রতীক কোনো বিষয় নয়। আমরা বিশ্বাস করি খেজুর গাছ প্রতীক বিজয়ী হবে।”
জমিয়তের জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ফেরদৌস আশা প্রকাশ করেছেন, বিএনপি ও জমিয়তের নেতাকর্মীরা একসঙ্গে কাজ করলে জোটের প্রার্থী সহজেই জয়ী হবেন।
অন্যদিকে, এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী হয়েছেন মহানগর আমির আবদুল জব্বার, আর এনসিপির প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন অ্যাডভোকেট আল আমিন। স্থানীয়ভাবে গুঞ্জন রয়েছে—একজন প্রভাবশালী শিল্পপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।
