আপেল খেলে যা যা উপকারিতা পাওয়া যায় ?

ছবি : সংগৃহীত


প্রাচীন প্রবাদে বলা হয় — “প্রতিদিন একটি আপেল, ডাক্তার রাখে দূরে” (An apple a day keeps the doctor away)। আপেল শুধু স্বাদে নয়, গুণে-ও অতুলনীয় একটি ফল। এতে রয়েছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার, যা আমাদের সার্বিক সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

চলুন জেনে নেওয়া যাক, আপেল খেলে কী কী উপকারিতা পাওয়া যায় -

১. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়

আপেলে থাকা সোলিউবল ফাইবার রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এতে থাকা পলিফেনল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান হৃদপিণ্ডের সুরক্ষা দেয় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

আপেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন C ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। নিয়মিত আপেল খেলে সাধারণ সর্দি, কাশি ও ইনফেকশন থেকে শরীরকে সুরক্ষিত রাখা যায়।

৩. মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায়

আপেলে থাকা কুয়েরসেটিন (Quercetin) নামের এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। এটি স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

৪. দাঁত ও মুখের যত্নে কার্যকর

আপেল খাওয়ার সময় এর আঁশযুক্ত গঠন দাঁতের ময়লা পরিষ্কার করে এবং মাড়ি শক্ত করে। এটি প্রাকৃতিকভাবে মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সহায়তা করে।

৫. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

আপেলের প্রাকৃতিক চিনি শরীরে ধীরে শোষিত হয়, ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা হঠাৎ বাড়ে না। এতে থাকা ফাইবার ও পলিফেনল ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায় — যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।

৬. ওজন কমাতে সাহায্য করে

আপেল ক্যালরিতে কম কিন্তু ফাইবারে সমৃদ্ধ। ফলে এটি দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে এবং অতিরিক্ত খাবারের প্রবণতা কমায়। নিয়মিত আপেল খাওয়া ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।

৭. ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বাড়ায়

আপেলের ভিটামিন C কোলাজেন তৈরিতে সহায়তা করে, যা ত্বককে টানটান ও উজ্জ্বল রাখে। এছাড়া এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের বার্ধক্য রোধে সহায়তা করে।

৮. হজমে সাহায্য করে

আপেলে থাকা পেকটিন (Pectin) নামের ফাইবার হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে। এটি অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

কখন ও কীভাবে আপেল খাওয়া সবচেয়ে ভালো -

  • সকালে খালি পেটে বা সকালের নাস্তায় একটি আপেল খাওয়া সবচেয়ে উপকারী।
  • আপেলের খোসা না ছাড়িয়ে খাওয়া ভালো, কারণ এতে বেশি পরিমাণে ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।
  • ফ্রিজে রাখার আগে আপেল ভালোভাবে শুকিয়ে সংরক্ষণ করুন।

আপেল শুধু একটি ফল নয়, এটি প্রকৃতির দেওয়া একটি প্রাকৃতিক ওষুধ। নিয়মিত আপেল খেলে শরীর যেমন সুস্থ থাকে, তেমনি মনও সতেজ থাকে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় একটি আপেল রাখুন এবং সুস্থ জীবন উপভোগ করুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন