বিএনপির ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা, শরিকদের জন্য ফাঁকা ৬৩ আসন

ছবি : সংগৃহীত


ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি মোট ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম প্রকাশ করেছে। তবে ৬৩টি আসন ইচ্ছাকৃতভাবে ফাঁকা রাখা হয়েছে — যাতে শরিক দলগুলোর জন্য আসন সমন্বয়ের সুযোগ থাকে।

বিশেষ করে যেসব রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে একযোগে কাজ করেছে, এমনকি ৫ আগস্টের পরও যারা সক্রিয়ভাবে দলটির পাশে থেকেছে — তাদের শীর্ষ নেতাদের জন্যই এই আসনগুলো সংরক্ষিত রাখা হয়েছে বলে বিএনপির একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

দলের নীতিনির্ধারকরা জানান, জোটভিত্তিক আসন ভাগাভাগি চূড়ান্ত হওয়ার পর এসব ফাঁকা আসনের অনেকগুলো শরিক দলের প্রার্থীদের দেওয়া হবে। পাশাপাশি, অবশিষ্ট আসনে বিএনপির ত্যাগী ও যোগ্য নেতাদের মনোনয়ন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। কিছু আসনে এখনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে — সেখানে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন, ফলে কার নাম দিলে জয়ের সম্ভাবনা বেশি হবে, তা এখনো যাচাই-বাছাই চলছে।

আরও একটি কারণ হলো, কিছু এলাকায় এখনই প্রার্থী ঘোষণা করলে দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধ বা বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা রয়েছে — তাই আপাতত সেসব আসন স্থগিত রাখা হয়েছে।

সোমবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই তালিকা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, “আমরা প্রায় ২৩৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করছি। আমাদের সঙ্গে যারা যুগপৎ আন্দোলন করেছেন, তারা যেসব আসনে প্রার্থী দিতে চান, সেখানে আমরা কাউকে দেইনি। পরে তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এলডিপি, গণতন্ত্র মঞ্চ, গণঅধিকার পরিষদ, গণফোরাম, ১২ দলীয় জোট, সমমনা জোট ও **বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)**সহ বিভিন্ন শরিক দলের জন্য কিছু আসন ফাঁকা রাখা হয়েছে।

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে বিএনপির সমর্থন পেতে পারেন এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদের ছেলে অধ্যাপক ওমর ফারুক।

বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে প্রার্থী হচ্ছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, যেখানেও বিএনপি কাউকে মনোনয়ন দেয়নি।

পটুয়াখালী-৩ আসনে সমর্থন পেতে পারেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, আর দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান লড়তে পারেন ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে।

লক্ষ্মীপুর-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন এলডিপির চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র সাহাদাত হোসেন সেলিম। তিনি জানিয়েছেন, “বিএনপির উচ্চপর্যায় থেকে আগেই আমাকে কাজ শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি নির্বাচনি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি এবং বিএনপির সমর্থন আমার ওপর থাকবে বলে আশাবাদী।”

লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে লড়বেন জেএসডি নেতা আসম আব্দুর রবের স্ত্রী তানিয়া রব।

ঢাকা-১৭ আসনে বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ এবং ঢাকা-১৩ আসনে ববি হাজ্জাজ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন — উভয় ক্ষেত্রেই বিএনপি কোনো প্রার্থী দেয়নি।

ঝালকাঠি-১ আসনে বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বিএনপির সমর্থনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। তিনি বলেন, “আমরা সবসময় বিএনপির পাশে থেকেছি, এবারও তাদের সমর্থন পাব বলে বিশ্বাস করি।”

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, যেখানেও বিএনপি কাউকে মনোনয়ন দেয়নি।

এছাড়া আরও বেশ কিছু আসনে শরিক দলের প্রার্থীদের সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আছে বলে জানা গেছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন